সকাল থেকেই আকাশটা অবিরাম কেঁদে চলেছে। থামার নাম নেই। অফিসের কাজগুলো শেষ করতে আসাদের বেশ সময় লাগল। অফিস থেকে বেরুতে বেরুতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেল। তাড়াতাড়ি
ফিরতে হবে। ওদিকে রাবু বাসায় একা আছে। এই দিনে রিক্সা পাওয়া দুষ্কর হবে।
শটকাট অবশ্য একটা আছে- বাসায় পোঁছতে দশ মিনিট মত লাগবে। কিন্তু সেটা
কবর স্থানের ভেতর দিয়ে। আসাদ অবশ্য বেশ সাহসী। ভয়ডর কম। দ্বিতীয়বার চিন্তা না করে
ছাতাটা খুলে নিয়ে আসাদ রওনা দিল।
কবরস্থানের
কাছে আসতেই
গাটা একটু ছমছম করে উঠল। এইরকম পরিবেশে কার না মন কেঁপে উঠে? আসাদ সেটাকে পাত্তা না
দিয়ে জোরে পা চালাতে শুরু করল। পায়ে চলা পথের দু’ধারে
ছোট বড় অনেক কবর । সেগুলোর অনেকগুলোই গজিয়ে উঠা ঝোপের আড়ালে ঢাকা পড়েছে।
রাস্তার
মাঝামাঝি আসতেই দূর থেকে ঠক ঠক আওয়াজ ভেসে এলো। ইঁটের গায়ে ছেনি ঠোকালে যেমন শব্দ
হয়, তেমন। আসাদের বুকের মধ্যে একটা ঠান্ডা স্রোত বয়ে গেল ।
একটু
থমকে দাঁড়াল সে। কী হতে পারে ওটা? যুক্তি দিয়ে বোঝার চেষ্টা করল সে।
একটু
ধাতস্থ হতেই কৌতুহলী হয়ে উঠল আসাদ।
পায়ে পায়ে
এগিয়ে গেল শব্দে উৎসের দিকে।
কয়েক
পা এগুতেই যা দেখল, তা দেখার জন্য মোটেও প্রস্তত ছিল না সে। বরফের মত জমে গেল তার
পা দুটো!
আসাদ
দেখল- সদ্য পাকা করা একটি কবরের সামনে একটা ফ্যাকাসে মানুষ দাঁড়িয়ে। গায়ে তখনও
সাদা কাফন জড়ানো। হাতে শক্ত কী জানি একটা।
এতো জ্যান্ত
লাশ!
আসাদের
উপস্থিতি টের পেয়ে লাশটি তার দিকে ঘুরল। আমতা আমতা গলায় বলল,
“ব্যাটারা আমার নাম লিখতে ভুল করেছে!”